মোঃ বাবুল আক্তার
ফারাক্কা বাঁধ (Farakka Barrage) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গঙ্গা নদীর ওপর অবস্থিত একটি বড় বাঁধ, যা ১৯৭৫ সালে চালু হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল হুগলি নদীতে পানির প্রবাহ বাড়িয়ে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা করা। তবে এই বাঁধ চালুর ফলে বাংলাদেশের বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া প্রভৃতি অঞ্চল) বিভিন্ন ক্ষতি হয়েছে। নিচে ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের প্রধান ক্ষতিগুলো তুলে ধরা হলো:
ফারাক্কা বাঁধ চালু হওয়ার পর গ্রীষ্মকালে (শুকনো মৌসুমে) গঙ্গা নদীর প্রবাহ নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। বাংলাদেশ অংশে পদ্মা নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে— সেচের পানির অভাবে কৃষি উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। অনেক নদী ও খাল শুষ্ক হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে পদ্মা শাখা নদীগুলো। অনেক এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। জলজ প্রাণী ও মাছের উৎপাদন কমেছে, বিশেষ করে ইলিশ মাছের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব: শুষ্কতা বেড়েছে, বৃষ্টিপাত কমেছে।
পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয় পানির গতিপথ পরিবর্তনের ফলে।উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, জমি শুষ্ক ও অনুর্বর হয়ে পড়ছে। কৃষক ও জেলেদের জীবনমান নেমে গেছে। জনগণের বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে নদীভাঙনের কারণে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে।ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পানি বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে ৩০ বছরের একটি গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের পানি, পরিবেশ, কৃষি, অর্থনীতি এবং মানুষের জীবনে বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিষয়টি এখনও আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করা খুবই জরুরী।
প্রধান সম্পাদকঃ মোঃ আরমান হোসেন ,সম্পাদকঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবু , নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ ইমরুল হকবার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২৭/বি ১ম কলোনি, মাজার রোড় মিরপুর - ১ ঢাকা, অফিস নাম্বারঃ ০৯৬১১৫২৮২৭২, Email: sottoprokash8643@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক সত্য প্রকাশ. All rights reserved.