সত্য প্রকাশ ডেস্ক
কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনের মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। পরে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাতে হাসপাতাল থেকে তেজগাঁও বাড়িতে নেওয়া হবে ফরিদা পারভীনের মরদেহ। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। এরপর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা। তারপর নেওয়া হবে কুষ্টিয়ায়, সেখানে জানাজা হবে। দাফন করা হবে কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে।
ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম নিমেরি উপল বলেন, ‘মাকে আমরা কুষ্টিয়াতে দাফন সম্পন্ন করব, তার ইচ্ছা অনুযায়ী।’ মেয়ে জিহান ফারিয়া বলেন, ‘মা মর্যাদা নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তার শেষ ইচ্ছে ছিল কুষ্টিয়া যাওয়ার।’ বাবা-মার কবরের পাশে দাফন করার শেষ ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তিনি।
সবশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফরিদা পারভীনকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পরই নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়; সেখান থেকে আর তাকে ফেরানো যায়নি।
ফরিদা পারভীন বেশকিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।
১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে ফরিদা পারভীনের পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। এরপর পার হতে হয় অনেক চড়াই-উতরাই। পারিবারিক সূত্রেই গানের ভুবনে আসা। গানের প্রতি বাবার টান ছিল বেশি। দাদিও গান করতেন। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে তাকে।
সংগীত জগতে ফরিদা পারভীনের পথচলা শুরু ১৯৬৮ সালে, রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে তিনি খ্যাতি পান। পরবর্তী সময়ে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক পান।
এর বাইরে ১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন। লালনশিল্পী হিসেবেই সুপরিচিত হন, তার কণ্ঠে বেশ কটি আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়।
প্রধান সম্পাদকঃ মোঃ আরমান হোসেন ,সম্পাদকঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবু , নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ ইমরুল হকবার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২৭/বি ১ম কলোনি, মাজার রোড় মিরপুর - ১ ঢাকা, অফিস নাম্বারঃ ০৯৬১১৫২৮২৭২, Email: sottoprokash8643@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক সত্য প্রকাশ. All rights reserved.