শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আসামিকে থানা হাজতে ঘুমানোর জন্য খাট, ভিআইপি বিছানা, সিগারেট ও মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার ওসি মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার বেশ কিছু ছবি বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে গ্রেফতার লিটন হাওলাদার থানা হাজতে একটি খাটে বসে আয়েশি ভঙ্গিতে সিগারেট হাতে নিয়ে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। এ ঘটনায় পুলিশের দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতা নিয়ে ফেসবুকসহ সুশীল সমাজে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বাইছে।
গোসাইরহাট থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, সিআর মামলায় এক বছর দুই মাস সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি লিটন হাওলাদার (৪৮)। ওই মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদ আলম। তবে তাকে অন্য আসামিদের থেকে আলাদাভাবে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থানার একটি কক্ষে রাখা হয়। পরের দিন তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে হাজতের মধ্যেই খাট এনে ভিআইপি বিছানা ও মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ এবং মাদকদ্রব্য সেবন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ওসি মাকসুদ আলম।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, মাকসুদ আলম গোসাইরহাট থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ঘুসের বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেওয়া, দাসের জঙ্গল গরুর হাট থেকে চাঁদা উত্তোলন, মাসোহারার মাধ্যমে নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া, মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানে নৌকাপ্রতি টাকা আদায়, মধ্যরাত পর্যন্ত থানায় বিচার সালিশ ও মামলার বাদী-বিবাদীদের সঙ্গে বৈঠক, বাজারের অবৈধ কারেন্ট জাল এবং পলিথিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মাসিক চুক্তির মাধ্যমে মাসোহারা আদায়ের বহু অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোসাইরহাট থানার ওসি মাকসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, অন্য একটি মামলায় জামিন পেয়ে আসামি লিটন হাওলাদার দেখা করার জন্য থানায় আসেন। তবে তিনি আরও একটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আসামি লিটন হাওলাদার নিজেকে অসুস্থ দাবি করলে আমি তাকে হাজতখানায় থাকার ব্যবস্থা করি। বিশেষ কোনো সুবিধা নিয়ে এ কাজ করার ব্যাপারটি অস্বীকার করলেও এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন ওসি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন বলেন, আসামি যদি অসুস্থ থাকে সেক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে রেখে পুলিশি তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর অভিযোগের ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ মোঃ আরমান হোসেন ,সম্পাদকঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবু , নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ ইমরুল হকবার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২৭/বি ১ম কলোনি, মাজার রোড় মিরপুর - ১ ঢাকা, অফিস নাম্বারঃ ০৯৬১১৫২৮২৭২, Email: sottoprokash8643@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক সত্য প্রকাশ. All rights reserved.