২ উপজেলার সরকারি গুরত্বপূর্ণ ৬ টি দপ্তরের দায়িত্ব একাই সামলাচ্ছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ। ইউএনও হিসেবে নিজ কার্যালয়ের কর্ম সম্পাদনের পাশাপাশি নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদের প্রশাসক, নাগেশ্বরী পৌরসভা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে সেখানকার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
৩৫ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা নাগেশ্বরী ইউএনও হিসেবে ২০২৪ সালের ২১ মার্চ যোগদান করেন। এরপর থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, দাপ্তরিক কাজের বাইরেও তিনি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, উপজেলা শিল্পকলার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। অনেকেই বলছেন তার কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ ২ উপজেলার মানুষ। অপরদিকে বিভিন্ন সময় হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারের পাশে দাড়িয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
গেলো বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর উপজেলা চেয়ারম্যানদের অপসারন করলে উপজেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। সেইসাথে পৌরসভার মেয়র অপসারিত হওয়ার ১ মাস পর তিনি পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বও পান।
এছাড়াও তৃনমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যেক্ত্যাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের চেয়ারম্যান অপসারিত হলে সেখানকার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান সিব্বির আহমেদ। এদিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় এই বছরের ৩ জুলাই এই দায়িত্বও নিতে হয় তাকে।
শুধু নিজ উপজেলাতেই শেষ নয়, সর্বশেষ পার্শ্ববতী ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অসুস্থ জনিত ছুটিতে থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদ প্রশাসকের দায়িত্ব পান।
চরাঞ্চলের মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে পূর্ব দুধকুমারপাড়ের কচাকাটা ইউনিয়নে অটো এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এমনকী দূর্গম চরাঞ্চল নারায়নপুর ইউনিয়নে নৌ এ্যাম্বুলেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে দুর্গম চরাঞ্চলীয় নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, একটা মানুষ আন্তরিকতার সাথে এতগুলো দায়িত্ব সমানভাবে কীভাবে সামলান তা ভাবতেই অবাক লাগে। এত কাজের ভিড়েও তিনি নারায়ণপুর চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ সার্বিকভাবে যেভাবে মানুষের পাশে থাকছেন এতে করে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত
।
বিশেষ করে দরিদ্র, অসহায়, প্রতিবন্ধী ও বিধবা নারীদের জীবন মান উন্নয়নে তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাবলম্বী করার যে চেষ্টা এটি সত্যিই চরাঞ্চলবাসীর জন্য আশির্বাদ। এছাড়াও এই এলাকার আইনশৃঙ্খলা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ সকল বিষয়ে তাঁর হাতের ছোঁয়ায় আজ চরাঞ্চলে পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। এজন্য আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ বলেন, আমি যোগদানের পর থেকেই সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমার উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব জনগনের কল্যানে নিষ্ঠারসাথে পালন করে যাচ্ছি। তবে, যে কোনো দায়িত্ব আল্লাহর তাআলার রহমত থেকে আসে।
সরকারের পক্ষে থেকে যে দায়িত্ব এসছে এটা এক ধরনের আশির্বাদ হিসেবে ধরে নিচ্ছি। চেষ্টা করছি সরকারের সকল নির্দেশনা সঠিকভাবে স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়ন করে এই অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার।