রতন কুমার ঘোষ
গণেশ ঠাকুর (বা গণপতি, গণপতি বাপ্পা, বীণায়ক) হিন্দু ধর্মের একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় ও পূজিত দেবতা। তিনি প্রধানত বুদ্ধি, জ্ঞান, সমৃদ্ধি, ও বাধা দূর করার দেবতা হিসেবে পূজিত হন। বিশেষ করে কোনো শুভ কাজ শুরু করার আগে হিন্দুরা প্রথমে গণেশ ঠাকুরের পূজা করে থাকেন, যাতে কাজটি সফল ও নিরবিচারে সম্পন্ন হয়।
গণেশ ঠাকুর সম্পর্কে মূল তথ্য:
নাম: গণেশ (Ganesha), গণপতি (Ganesha বা Ganapati), বীণায়ক, লম্বোদর, বিকটেশ্বর ইত্যাদি। পিতামাতা: পিতা: শিব (মহাদেব) মাতা: পার্বতী, চিন্হ: হাতির মতো মাথা, একটি দাঁত (অধিকাংশ চিত্রে তাঁর একটি দাঁত ভাঙা থাকে) বড় পেট, চারটি হাত (সাধারণত) বাহন: ইঁদুর (মুশক) কেন গণেশ ঠাকুরের হাতির মাথা?
এই সম্পর্কে একটি বিখ্যাত কাহিনি আছে: পার্বতী দেবী তাঁর নিজের দেহের মাটি দিয়ে একটি শিশু তৈরি করেছিলেন এবং তাকে পাহারাদার হিসেবে রেখে স্নান করতে যান। এদিকে, শিব যখন ফিরে আসেন, তখন গণেশ তাঁকে চিনতে না পেরে স্নানঘরে প্রবেশ করতে বাধা দেন। রাগে শিব তাঁর মাথা কেটে ফেলেন। পরে যখন পার্বতী সব জানালেন, তখন শিব অনুতপ্ত হন এবং একটি হাতির মাথা এনে তার দেহে বসান। তখন থেকেই গণেশ ঠাকুরের হাতির মাথা। গণেশ চতুর্থী হলো গণেশ ঠাকুরের সবচেয়ে বড় উৎসব, যা ভাদ্র মাসে (আগস্ট-সেপ্টেম্বরে) উদযাপিত হয়। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, ও অন্ধ্রপ্রদেশে এটি অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়।
বাংলাতেও দুর্গাপূজার সময় আগে আগে গণেশ পূজা হয়, কারণ তিনি দেবী দুর্গার পুত্র হিসেবেও পূজিত হন। গণেশের প্রতীকী অর্থ, হাতির মাথা: জ্ঞানের প্রতীক, বড় কান: শোনার ক্ষমতা বেশি, এক দাঁত: ত্যাগের প্রতীক, মুশক বাহন: জ্ঞানের দ্বারা যেকোনো ছোট বিষয়কেও জয় করা সম্ভব