তারিকুল আলম
এক পাশে নদ, অন্য পাশে সাদা বকের সারির মতো যেন পালক ফুলিয়ে হাওয়ায় দুলছে কাশফুল। এ যেন যমুনা নদীর পাড়ে সবুজের ভেতর অনেকটা জায়গাজুড়ে সাদার মেলা বসিয়েছে কাশফুল।
শরৎকাল এলেই সিরাজগঞ্জ শহরের চর-মালশাপাড়া (কাটাওয়াবদা) ক্রসবার-৩ এলাকায় কাশফুলের সৌন্দর্যের টানে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় জমে। দুই থেকে তিন মাসব্যাপী কাশফুলের সাদা-ধূসর সাম্রাজ্য সবাইকে মুগ্ধ করে।
মঙ্গলবার (১৬সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে কাশফুল ফুটেছে। লম্বা-চিরল সবুজ পাতার বুক থেকে বেরিয়ে আসা কাশফুল কোথাও থোকা থোকা, কোথাও ঠাস বোনা গুচ্ছ। জেলার বাহিরে থেকে আসা ভ্রমণপিয়াসুদের এ কাশফুলের ছোয়া নিতে আসতে দেখা যায়। আশপাশের বিভিন্ন বয়সের মানুষ এই কাশবনে বেড়াতে এসেছেন। কেউ মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। কেউ আবার দু-চারটি কাশফুল ছিঁড়ে তোড়ার মতো তৈরি করছেন। আশপাশের শিশুরা কাশবনে খেলায় মেতে উঠেছে। হঠাৎ মনে হবে, সেখানে সাদা চাদর বিছানো। দক্ষিণ আকাশে তখন কিছু মেঘ জমেছে। থেমে থেমে মেঘও ডাকছে। নদের বুক ছুঁয়ে শীতল হাওয়া ভেসে আসছে কাশের বনে। হাওয়ায় দুলছে, নেচে উঠছে কাশফুল।
স্থানীয়রা জানান, ভাদ্র মাসের শেষ দিকে কাশফুল ফুটতে শুরু করে। এ সময় পুরো এলাকা সাদা হয়ে যায়। কার্তিক মাস পর্যন্ত কাশফুল থাকে।
এখানে ঘুরতে আশা তুহিন বলেন, যমুনা নদীর চরেই খেলাধুলা করে তার বেড়ে ওঠা। কয়েক বছর ধরে এখানে ফুল ফুটছে। বিকেল হলেই প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসে। ছবি তোলে, ভিডিও করে।
এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে এলো। তখন দূর আকাশে চাঁদের আভা ফুটে উঠেছে। কখনো মেঘের আড়ালে সেই চাঁদ আটকা পড়ছে। সন্ধ্যার হালকা আঁধারে তখন যমুনার জলে যেন টুকরা টুকরা রুপালি কাচ ভাসছে। এ যেন প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য যা দর্শনার্থীরা দেখে মুগ্ধ হয় ।