কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেরা বেগমের (৭০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের রামদাস ধনিরাম খেয়ারপাড় গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত সাহেরা বেগম স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের মৃত নুরুজ্জামানের স্ত্রী।
সকাল ১০টার দিকে খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের বড় ছেলে শাখাওয়াত হোসেন বাবলু জানান, তার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর থেকেই একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বাবলুর দাবি, ভোর রাতে রান্নাঘরে গিয়ে ধারালো বটি দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেছেন তার মা।
ছোট ছেলে শাহিন আলম বলেন, “ভোরে আমার স্ত্রী হঠাৎ শাশুড়িকে বিছানায় না দেখে খুঁজতে যান। পরে রান্নাঘরের দরজা খুলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে পড়ে থাকতে দেখেন। আমরা ছুটে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় পাই।”
শাহিনের স্ত্রী বিউটি বেগম জানান, তিনি দীর্ঘদিন শাশুড়ির সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতেন। মাঝে মাঝে রাতে সাহেরা বেগম ঘুম না হলে আঙিনায় হাঁটাহাঁটি করতেন। “আজ ভোরে তাকে বিছানায় না পেয়ে খুঁজতে গিয়ে রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পাশে ব্যবহৃত বটিও ছিল,” বলেন তিনি।
স্থানীয়দের মতে, সাহেরা বেগম রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং সমাজসেবায়ও নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তিনি গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত মহিলা সদস্য ছিলেন এবং একসময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।”