মোঃ বাবুল আক্তার
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানা (বর্তমানে ভেড়ামারা উপজেলা) বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং কিছু গর্ব করার মতো দিক।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান:
ভেড়ামারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এই অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের স্মৃতি আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে। এখানে বহু সাহসী যোদ্ধার আত্মত্যাগ ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে।
ভেড়ামারা রেল জংশন, এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। ঢাকা-খুলনা রুটে ভেড়ামারা একটি ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। একসময় এই ভেড়ামারা রেলস্টেশন ছিল কলকাতা-সিলিগুড়ি রেলরুটের একটি স্টপেজ, যা ব্রিটিশ আমলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পদ্মা নদী, ভেড়ামারার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পদ্মা নদী। নদী কেন্দ্রিক জীবনযাত্রা, মৎস্যসম্পদ এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য – সব মিলিয়ে এটি একটি মনোমুগ্ধকর অঞ্চল।
জ্ঞান ও শিক্ষা, ভেড়ামারায় অনেক ভালো স্কুল, কলেজ রয়েছে যেমন ভেড়ামারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভেড়ামারা কলেজ যেগুলোর মাধ্যমে বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী জাতীয় পর্যায়ে অবদান রেখেছে। শিল্প ও সংস্কৃতি, কুষ্টিয়ার মতো ভেড়ামারাও লালন শাহের দর্শনের আলোকে প্রভাবিত। এখানকার মানুষের মধ্যে সংস্কৃতির চর্চা, বিশেষ করে লোকসংগীত, নজরুলগীতি, এবং নাট্যচর্চা রয়েছে। অনেক সাহিত্যপ্রেমী ও সাংস্কৃতিক কর্মী এই অঞ্চলে সক্রিয়। আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন, ভেড়ামারা এখন ধীরে ধীরে একটি আধুনিক শহরে রূপ নিচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যেমন রাস্তা, সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি প্রসারে সরকারের নজর রয়েছে। ভেড়ামারা পাওয়ার প্ল্যান্ট, ভেড়ামারায় স্থাপিত হয়েছে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র (ভেড়ামারা গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্র) যা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এটি জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমে অবদান, স্থানীয়ভাবে অনেক গণমাধ্যমকর্মী ও সংবাদপত্রের প্রতিনিধিরা এই অঞ্চলে কাজ করছেন, যারা দেশজুড়ে খবর পৌঁছাতে ভূমিকা রাখছেন।
ভেড়ামারা শুধু একটি থানা বা উপজেলা নয়, এটি একটি ইতিহাস, সংস্কৃতি আর সম্ভাবনার নাম।