সত্য প্রকাশ ডেস্ক
সারা দেশে ১৫ বছরের কম বয়সি ৫ কোটি শিশুকে টাইফয়েডের যে টিকা দেওয়া হবে, তাতে ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষিত জানিয়ে সবাইকে ‘বিভ্রান্ত না হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এবারের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
১২ অক্টোবর থেকে সারা দেশে শুরু হতে যাওয়া টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ডা. সায়েদুর।
তিনি বলেন, এই টিকায় একই সঙ্গে প্রোটিন ও শর্করা থাকায় দুটি উপাদানই শরীরে টাইফয়েড রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করে। তাই অন্যান্য টাইফয়েড টিকার তুলনায় এটি উন্নত এবং বেশি কার্যকর। বাংলাদেশে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগও হচ্ছে না।
‘বাংলাদেশ সরকার দেশের শিশুদের নিরাপদ ও কার্যকর টিকাদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সামান্যতম সন্দেহ বা ঝুঁকি থাকলে সেই টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত সরকার কখনোই নেয় না। টাইফয়েড টিকা এবং ইপিআইয়ের সকল টিকা সঠিক তাপমাত্রায় পরিবহণ এবং সংরক্ষণ করা হয়। তাই এইটিকা নিয়ে কোনো সংশয় বা বিভ্রান্ত হবার অবকাশ নেই।’
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি’র বরাত দিয়ে সায়েদুর রহমান বলেন, ২০২১ সালে বিশ্বে ৭০ লাখের বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়, মৃত্যু হয় ৯৩ হাজারের। মৃতদের একটা বড় অংশ দক্ষিণ এশিয়ায়।
এ সময় বাংলাদেশে প্রায় আট হাজার মানুষ টাইফয়েড জ্বরে মারা যায়। এর ৬৮ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ছয় হাজার জনের বয়স ১৫ বছরের কম।
‘টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় প্রচলিত যেসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়, তার একটি বড় অংশ কাজ করছে না। ফলে ভয়াবহ ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাইফয়েড টিকা নিলে এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেকাংশে কমে যাবে। এতে অ্যান্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগ কমে আসবে। এছাড়া শিশুদের টাইফয়েড সংক্রমণজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুহার বহুলাংশে কমাবে।’
সায়েদুর রহমান বলেন, টাইফয়েড টিকা নেওয়ার পর অন্য টিকার মতই সামান্য প্রতিক্রিয়া হতে পারে।টিকা দেওয়ার জায়গায় লালচে হওয়া, সামান্য ব্যথা, মৃদু জ্বর, ক্লান্তি ভাব হতে পারে; এগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। অনেক সময় সময় দেখা যায় একই সঙ্গে অনেক কিশোর-কিশোরী অসুস্থতা বোধ করছে বা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘ম্যাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বলে, যা টিকা গ্রহণের আগে বা পরে মানসিক ভীতিজনিত কারণে হয়।
‘ভীতিজনিত এই প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে টিকাজনিত অসুস্থতার কোনো সম্পর্ক নেই। আর এই টিকায় শরিয়ত নিষিদ্ধ কোনো উপকরণ নেই, টাইফয়েড টিকা সৌদি হালাল সেন্টারের হালাল সনদপ্রাপ্ত।’